শ্যামলী ত্রিপুরা প্রতিনিধি, নয়া দিল্লি, ১৩ জুলাই।। দিল্লি শহরের রাস্তায় বইতে শুরু করেছিল যমুনার জল। বন্যার জল পৌঁছে গিয়েছিল রিং রোড পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের বাসভবন থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে পৌঁছে গেল বন্যা। যমুনা নদী ফুলে ফেঁপে উঠে পৌঁছে গিয়েছে দিল্লির সিভিল লাইনস আবাসিক এলাকার মাত্র ৩৫০ মিটারের মধ্যে। এই সিভিল লাইনস এলাকাতেই থাকেন কেজরীবাল এবং অন্যান্য শীর্ষ সরকারী কর্মকর্তারা। এর থেকেই রাজধানীর করুণ চিত্রটা স্পষ্ট হয় উঠেছে। পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। বুধবার ৪৫ বছরের রেকর্ড ভেঙে ২০৭ মিটারের উচ্চতার সীমা লঙ্ঘন করে গিয়েছিল যমুনা। বৃহস্পতিবার সকালে, তা ছাপিয়ে গিয়েছে ২০৮ মিটারের মাত্রাও। ফলে, রবিবার পর্যন্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, কম গুরুত্বের সরকারি অফিসগুলি রবিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। তুমুল তৎপরতা দেখা গিয়েছে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে।এদিন দিল্লির বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে বন্যা মোকাবিলার বিষয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। তারপরই স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। একই সঙ্গে যথা সম্ভব ওয়ার্ক ফ্রম হোমের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বৈঠকের পর কেজরীবাল বলেছেন, “ডিডিএমএ-র কর্তাদের সঙ্গে আমরা একটা মিটিং করেছি। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলি রবিবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। প্রয়োজনীয় পরিষেবা সম্পর্কিত অফিসগুলি বাকি সব সরকারি অফিসে বাড়ি থেকে কাজ করা হবে। বেসরকারি অফিসগুলিকেও বাড়ি থেকে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”২ কোটি জনসংখ্যার শহরে নীচু এলাকার শয়ে শয়ে বাসিন্দা এখন ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। কেজরীবাল জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই, বন্যাকবলিত এলাকাগুলি থেকে সকল বাসিন্দাদের নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “মানুষের প্রাণ বাঁচানোই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। এই জরুরি পরিস্থিতিতে আমি দিল্লির সকল মানুষকে সম্ভাব্য সকল উপায়ে একে অপরকে সহযোগিতা করার আবেদন করছি।” তিনি আরও জানিয়েছেন, ত্রাণ শিবিরগুলিতে শৌচাগার এবং স্নানের জায়গার সমস্যা ছিল। তাই, শিবিরগুলি বিভিন্ন স্কুলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এছাড়া, অত্যাবশ্যক পরিষেবা সরবরাহকারী ছাড়া কোনও ভারি যানবাহন দিল্লিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।