36 C
Agartala
Wednesday, April 24, 2024
- Advertisemet -spot_img

একটা ছেলে কীভাবে হয়ে উঠল লেখক? তার পেছনের কাহিনীটা কী?

শ্যামলী ত্রিপুরা, দিগন্ত দাস:

কে না চেনে উনাকে? রাজ্যের ফুটে ওঠা এক প্রতিভা। যাকে এখন অনেকেই চেনেন। রাজ্যের লেখক সৈকত সরকার। যার এখন পরিচিতির দরকার হয় না। সৈকত সরকারের সঙ্গে এক ইন্টারভিউ নিয়েছেন শ্যামলী ত্রিপুরার সাংবাদিক দিগন্ত দাস। দিগন্তের সাথে সৈকতের কথোকথনের বর্নন নীচে দেওয়া হল:

সাংবাদিক: সৈকত সরকারের জন্ম, পড়াশোনা কোথা থেকে?

সৈকত: অক্টোবরের ২৪ তারিখ, ১৯৯৬ সালে, দক্ষিণজেলার বিলোনীয়ার ঋষ্যমুখ্য কৃষ্ণনগরে আমার জন্ম। দশম শ্রেণী অব্দি কৃষ্ণনগর দ্বাদশ শ্রেণি বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি। সেখান থেকে মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে আগরতলা প্রগতি বিদ্যাভবনে ভর্তি হই। সেখানে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়ি। দ্বাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে দেরাদুন ধুন কলেজ থেকে কলেজ জীবন শেষ করি। Agriculture & alight science নিয়ে কলেজে পড়ি। সেখান থেকে Bsc শেষ করার পরে এখন বর্তমানে মাস্টার ডিগ্রি করছি বরকাতোল্লা ইউনিভার্সিটি, ভোপাল থেকে। আমার বাবার নাম রাখাল সরকার, পেশায় স্কুল শিক্ষক এবং মার নাম ঝিমলি রায় সরকার, তিনি গৃহিনী।

সাংবাদিক: কীভাবে একজন লেখক/ lyricist হওয়ার কথা মাথায় এল?

সৈকত: আমি কোনোদিন গান শিখিনি।আমি মূলক একজন নাটকের শিল্পী। স্কুল লেভেলে প্রচুর নাটক করতাম। আর আমার বাবাও একজন যাত্রা শিল্পী ছিল। তো বাড়িতে একটা Cultural (সাংস্কৃতিক) মহল আগে থেকেই ছিল। ছোটোবেলা থেকেই প্রচুর বই পড়ার যে অভ্যাসটা সেটা ছিল। কিন্তু লেখালেখি তখনও করতাম না। লেখালেখি শুরু হয়েছে প্রগতি স্কুলে গিয়ে মানে আগরতলাতে যখন পড়তে যায় তখন প্রগতি স্কুলে পড়তাম। আমাকে একদিন দেওয়াল পত্রিকাতে কিছু লেখতে বলে। সেখান থেকেই লেখালেখির শুরু। স্কুলে অমল চক্রবর্তী নামের একজন স্যার ছিল। ওনার কাছ থেকেই লেখা শুরু করি আমি। তো এভাবেই লেখা-লেখি করতে করতে, কিন্তু তখনও আমি নাটক করছি সঙ্গে দেরাদুনে ন্যাশানাল স্কুল অব থিয়েটার নামে নাটকের স্কুলে আমি অ্যাসোসিয়েট ছিলাম। সেখানে আমি নাটক শিখতাম এবং করতাম। তো হঠাৎ করেই লেখালেখিটা করতে করতে, গান শুনতে শুনতে, তাছাড়া মূল কথা যেটা প্রথমবার প্রেমে ব্যার্থ হওয়ার পরে হঠাৎ করেই একটা র‍্যাপ গান আমি কবিতার মতো শুনায়। তো তখন জিও (Jio) নতুন নতুন এসেছে। তো এইসব র‍্যাপ গানের তখন খুব চর্চা ছিল। তো এইথেকেই সেই কবিতাটাকে নিয়ে একটা র‍্যাপের আকার দেই। তো এইভাবে করতে করতে একদিন কোথায় গিয়ে আমার মনে হয় আমিও পারব সেটা করতে। নানান গান শুনতে শুনতে মনে হয় যে না গান নিয়ে আমি কিছু করতে পারব। ততদিনে আমার নাটক করাটা বন্ধ হয়ে গিয়েছে পড়াশোনার চাপে।
তো এভাবে নানান বই পড়তে শুরো করি। তো এভাবে করতে করতেই আমার অনেক গান আসতে শুরু করে। প্রথম গান Zbee entertainment এ আমার আসে যেটা ছিল ‘দশভূজা’। তারপর আজকের দিনে দাড়িয়ে প্রায় ৫০ টার মতো গান আমার লেখা।
আর অপরদিকে আরেকটা কথা অনেকেই হইতো জানেন না আমি শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। অষ্টম শ্রেণিতে যখন পড়তাম তখন আমি পলি অ্যাথরাইটিজ রোগে আক্রান্ত হয়ে বাম পায়ের দিগজয় টা damage হয়ে যায়। আজকের দিনে দাড়িয়ে আমি ৪০% প্রতিবন্ধী।

সাংবাদিক: সৈকতের প্রিয় গান কোনটি? হ্যাঁ, একজন লেখকের কাছে তো সব গানই প্রিয় হয়, তবে যদি স্পেশাল বলি তাহলে কোনটা হবে?

সৈকত: হ্যাঁ, বিশেষ গানের কথা যদি বলা হয়। যেটা আমি বেশি শুনি সেটা হচ্ছে ‘হৃদি’। এছাড়া অন্য দুর্গাপূজার গানগুলাও শুনি। তবে হৃদি’। ‘হৃদি’ মানে হৃদি’ই। ‘হৃদি’ এর জায়গা অন্য কেউ নিতে পারবে না।

সাংবাদিক: এবার পূজায় সৈকতের কয়টা গান আসছে? গতবারও ত সৈকত সরকারের লখা ৭ টা গান এসেছিল, এবার কয়টা আসবে?

সৈকত: এখনো অব্দি যতটুকু কথাবার্তা হয়েছে, এবার পুজোতেও ৭ গান আসছে। এরমধ্যে ৫ টা গান হচ্ছে দূর্গা পুজোর। আর বাকি ২ টা অন্যধরণের অন্যস্বাদের গান। একটা ‘হৃদয়পুরের পাখি’ সেটা ইতিমধ্যেই রিলিজ হয়ে গেছে। আরেকটা গান হচ্ছে ধিনচাপ বয়েজ এবং প্রেঙ্ক জোন এর সাথে মিলে আসছে। আর বাকি পাঁচটা গান আসছে দুর্গাপুজোর।

সাংবাদিক: কেমন অনুভূতি লাগে? পুজোতে যখন তোমার গানের অপেক্ষায় থাকে মানুষেরা, তোমার নতুন নতুন কাজের অপেক্ষায় যখন থাকে মানুষজন, কেমন লাগে?

সৈকত: ভালো লাগে, অনেক বেশি ভালো লাগে। দুর্গাপুজোতে যখন অনেক প্যান্ডেলে নিজের গান শুনি। এমনকি আমার গানে পারফরম্যান্সও হয়। এমনও হয়েছে, আমি পুজোতে প্যান্ডেলে গেছি, সেখানে আমার গানে মানুষ নাচ্ছে, কিন্তু হইত আমাকে কেউ চেনে না। এটার মধ্যেই একটা আলাদা মজা আছে। ভিড়ের মধ্যে থেকেও মানুষ কীভাবে মানুষ আমার গানটাকে উপভোগ করছে। এবার মানুষ আমাকে চিনুক কিংবা না চিনুক চেহারা দিয়ে কিন্তু আমার গানটাকে আমার কর্মকে যাতে সবাই মনে রাখে। আর সবসময়ই যাতে এরকম সাপোর্ট পেতে পারি সেটা চাই। মানুষের সাপোর্ট যখন পাই, যখন তারা আমার কাজ নিয়ে আমাকে উৎসাহ দেয় সেটা অনেক ভালো লাগে। তবে, হ্যাঁ আমি যতটুকু উৎসাহ পছন্দ করি, তার পাশাপাশি আমি চাই মানুষ যাতে আমার ভুলত্রুটি গুলাও ঠিক সেভাবেই তুলে ধরে। কোনোকিছু যদি ঠিক করার দরকার লাগে বা কোনো আইডিয়া যাতে দেয় যে আমি এমনটাইও দেখতে পারি। তো এভাবেই আলোচনা-সমালোচনার আশা করি। যদিও সমালোচনাটা তেমন হয় না। সবাই কাজগুলোকে পছন্দই করে। তবুও আমি আলোচনা-সমালোচনা দুটাকে পাশে নিয়ে চলতেই পছন্দ করি। তাতে আমার improvement ও হবে এবং আমার motivationও বাড়বে।

সাংবাদিক: ভবিষ্যতের রাজ্যের এই ইন্ড্রাস্ট্রিটাকে কীভাবে দেখছ?

সৈকত: ইন্ডাস্ট্রি বলতে আমি সিনেমেটিক ইন্ডাস্ট্রির কথা এতো ডিটেইলসে বলতে পারব না, যে কী হচ্ছে বা ভবিষ্যতে কী হবে? তবে আমার যেটা মনে হয়, প্রাইভেট ইনভেষ্টমেন্ট যতক্ষণ পযর্ন্ত না ত্রিপুরাতে আসছে মানে, government যতক্ষণ না পযর্ন্ত সাপোর্ট, মণিপুর -আসামে যেভাবে government সাপোর্ট আছে সেটা যতক্ষণ পযর্ন্ত ভালো-ঠিকভাবে আমরা না পাচ্ছি ততক্ষণ অব্দি growth এর সম্ভাবনা একদমই নেই। তবে বেসরকারি নিয়োগ (private investment) অত্যন্ত জরুরি। Private investment ঢুকলে সম্পূর্ণ উত্তরপূর্ব ভারত (North East) কে নিয়ে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি করা যায়। এখানে প্রতিভার কোনো অভাব নেই, এখনে সৌন্দর্যের অভাব নেই, এখানে সৃষ্টির কোনো অভাব নেই। আর basically আমি যটা দেখতে পাচ্ছি ভবিষ্যতে আমাদের যেটা film industry হোক কিংবা না হোক কিন্তু Web-industry যেটা অর্থাৎ digitally যেটা আছে web-series কিংবা short-film ঐগুলার একটা বিশেষ সুযোগ আছে এবং ঐ দিনটা আসছে। এখন ত্রিপুরাতে ‘উমাবতী’ একটা ওয়েবসিরিজ আসছে যেখানে আমারও একটা গান আসছে। ত্রিপুরারই সেই ওয়েবসিরিজ। সেটা আলাদা যে সেই ওয়েবসিরিজের কোয়ালিটি কত হবে? কিন্তু হচ্ছে তো! এরাজ্যে দাড়িয়ে ওয়েবসিরিজ হচ্ছে সেটাই অনেক। তবে হ্যাঁ, ফিল্ম একটা বিশাল বড় জিনিস এই জিয়গায় জন্য। সরকারকেও দৃষ্টি দেওয়া দরকার। আর private sector এ যারা আছে তাদেরকেও এবিষয়টা দেখা দরকার। তবে হ্যাঁ আমি এটা বলতে পারি ডিজিটাল ইন্ডাস্ট্রিতে আমরা আরো উপরে যাব। আমার স্বপ্ন আছে আমার একদিন নিজের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি হবে। আমি অন্তত digitally হইলেও যাতে আমি ত্রিপুরাকে represent করতে পারি। আজকে যেমন করে ‘দুগ্গা আইছে’, ‘জয়ধ্বনী’, ‘হৃদি’, কিংবা ‘গৌরিপক্ষ’ এইসব গানগুলো করেছি।

সাংবাদিক: আচ্ছা তোমার ব্যক্তিগত জীবনে কে সর্বদা তোমার পাশে থেকে সাপোর্ট করে গেছে?

সৈকত: সম্পূর্ণ যদি সেই হিসেবে বলি তাহলে সাপোর্ট করেছে বলতে, আমার মা-বাবা হইত জিনিসগুলোকে সেভাবে express করে না তবে মা-বাবার সাহায্য ছাড়া আমি আজ অতদূর আসতে পারতাম না। আর যেহেতু আমি নিজেই cutural family এর একজন ছেলে তো একটা রক্তের মধ্যে সেই জোশ, সেই সাপোর্ট এবং সেই মহলটাও পেয়েছি। দ্বিতীয়ত, যার কথা বলি তবে প্রিয়তমা আছে যে উনার কাছ থেকেও একটা সাপোর্ট আছে। আমার বন্ধুদের কাছে থেকেও অনেক সাপোর্ট পাই। বিপ্লব দেব বন্ধু হিসেবে সাপোর্ট করেছে। এছাড়াও এখন যারা আছে, কিষাণ দা,সুরজিৎ দা আছে। তারা প্রত্যেকেরই অবদান আছে আমার জীবনে। তাদের প্রত্যেকের থেকেই শিখেছি কীভাবে এগিয়ে যেতে হয় জীবনে। কীভাবে কী করতে হয়। অবশ্যই, অণির্বান যে আমাকে প্রথমবার ফান হোলিকে ব্রেক দিয়েছিল। যেখানে থেকে মানুষে আমার কাজ আরো বেশি চিনেছে। আমরা একটা প্যারোডি করেছিলাম, ‘বৌ এর গোলাম’। তো বলতে গেলে আমার আশেপাশের এই লোকগুলার গুরুত্ব অনেক বশি যারা আমাকে সাপোর্ট করে গেছে। আর সর্বোপরি দর্শকরা।

সাংবাদিক:আচ্ছা তোমার অনুপ্রেরণা যদি বলি, তবে সেই অনুপ্রেরণাটা কার কাছ থেকে আসে?

সৈকত: lyricist এর অনুপ্ররেণা যদি বল তবে অমিতাভ ভট্টাচার্য, মনোজ মুন্তেশির স্যার, ইরস্যাদ কামিল স্যার, গুলজার স্যার, নচিকেতা চক্রবর্তী আর অবশ্যই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

সাংবাদিক: পছন্দের গায়কের কথা যদি বলি তবে সেটা কে? রাজ্যের বল বা দেশের।

সৈকত: আমার পছন্দের একজন নয় দুজন আছে। আমি অরিজিৎ সিং এবং শ্রেয়া ঘোষালের অনেক বড় ফ্যান, অনেক বড় শ্রোতা, সবসময় আমি উনাদের শুনি, তাদের যে versatility (বহুমুখিতার প্রতিভা) সেটা আমার ভালো লাগে। আর রাজ্যের ক্ষেত্রে যদি বলি তবে কিষাণ আছে, ওর কন্ঠ আমার ভালো লাগে। এরপর বাকিরা তো আছেই। তবে ভালোলাগার যে জায়গাটা, সবসময় আমি শিল্পী/লেখক হিসেবে আমি সবসময় দেখি কে কতটুকু versatile? যে যতবেশি versatile, তাকে আমার তত বেশি ভালো লাগে।

সাংবাদিক: সৈকতের পছন্দের অভিনেতা- অভিনেত্রী কে?

সৈকত: পছন্দের অভিনেতা অভিনেত্রী বলতে গেলে রণবীর সিং, আমার অত্যন্ত প্রিয় একজন অভিনেতা, কারণটা সেই versatile, সবধরণের রোলের জন্যই ফিট। অক্ষয় কুমারও প্রিয়।
আর অভিনেত্রী বললে দীপিকা পাডুকোন।

সাংবাদিক:এবারের সৈকত সরকারের পুজোর প্লেন কী?

সৈকত: এবার পুজার প্লেন যদি বলি আমি অনেকদিন ধরেই মঞ্চ থেকে দূরে আছি। এবার আবার ফিরছি নাটকের সেই মঞ্চে। এবার একটা আমরা ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ প্লে করতে যাচ্ছি। আর গানতো ঠিকাছে আসবে। অনেকগুলা বাছাবাছা কাজ করছি। কোনোকিছুর খামতি না রাখর চেষ্টা করেছি গানে। আর ব্যক্তিগত বললে পুজোর তিনদিন মা-বাবার সাথে, বন্ধু-বান্ধবের সাথেই ঘুরাফেরা করব। আর ঐযে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সেই মঞ্চে আবারো ফিরব। ব্যাস, এখন অব্দি এতটুকুই প্লেন।

সাংবাদিক: গানের সঙ্গে ত যুক্তই, বললে নাটকও কর, এছাড়া সৈকত আর কি করে?

সৈকত: একজন ভালো আবৃত্তিও করি। বললামই ত নাটক করি আমি। আর এমনিতে ২০১২ তে রাজ্যভিত্তিক বনদপ্তর আয়োজিত বিতর্ক সভাতে সারা রাজ্যে প্রথম হই, দক্ষিণ জলা থেকে অংশগ্রহন করি। আর জিবনে এখনো অব্দি debate, speech, আবৃতি এর জন্য অনেক সম্মান পেয়েছি। কিন্তু গানের জগতে আসার পর সেগুলা চলে যায়। তো আমি চাইছি আবারো সেই মঞ্চটাতে ফিরে আসতে। তাই ফেসবুকে আবার আবৃতি করাটা শুরু করেছি।

সাংবাদিক: প্রোফেশানালি সৈকত কী করছে? বা ভবিষ্যতের প্লেন কী?

সৈকত: ফিসারিতে আমি এখন মাস্টার্স করছি। তো আপাতত মাষ্টারডিগ্রি চলছে। তো ভবিষ্যতে আমার প্লেন একজন entrepreneur হওয়ার, agricultural based ব্যাবসায়ী হওয়ার ইচ্ছে আমার। আর রাজ্যে নিজের ইন্ডাষ্ট্রী তৈরি করার। রাজ্যে যাতে আমি আরো ১০ জনকে কর্মসংস্থান করে দিতে পারি সেটাই আমার প্লেন। আর সংগীতটাকে নিয়ে এই কালচার লাইফটাকে নিয়ে ডিজিটালই হোক না কেন নিজের একটা প্রোডাকশান হাউস আমি করব। এটাই আমার ভবিষ্যতের ইচ্ছে।

সাংবাদিক:সরাজ্যের শিল্পীদেরকে নিয়ে কী বলবে?

সৈকত: রাজ্যের শিল্পীরা অন্তত আমাদের এখানে যে মিউজিক কলেজ আছে। যেখানে অনেকেই ডান্স কিংবা মিউজিক শিখছে তাদের কর্মসংস্থানটা যাতে অন্তত হয়। এটাকে যাতে extra cariculam হিসেবে দেখা না হয়। সেটাকে যেন একটা subject হিসেবে দেখা হয়। অনেক বলে মিউজিক শিখে কী হবে? মানে সেই কথাটা যাতে না হয়। প্রত্যেকটা স্কুলে যেরকম সংগীত শিক্ষক নেওয়ার কথা। সেটা যাতে নেওয়া হয়। পাড়ায় আগে হারমোনির রেওয়াজ শুনতাম কিন্তু আজকাল হইত তেমনটা আর শোনা যায় না। তাই হইত আজকাল সামাজিক অধঃপতন দেখা যাচ্ছে। আমার মতে সংস্কৃতিটাকে যদি ধরে না রাখা যায় সভ্যতাটা অচিরেই ধ্বংস হয়ে যাবে। তো শিল্পীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হোক। অত্যন্ত এমন যার মধ্যে প্রতিভা আছে তাকে যেন বসে থাকতে না হয়। খেলার জগতে যেমন TCA আছে। এরকম কিছু তৈরি করা হোক রাজ্যের শিল্পীদের নিয়ে। অনেককিছুই বলা হচ্ছে রাজ্যে এটা হবে সেটা হবে, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি হবে। কিন্তু শিল্পীদের include করা হচ্ছে না। শিল্পীদের include না করে decision নিলে মনে হয় না ভালো হবে। কারণ, নজরুল গ্রন্থাগারেও আমরা আগে দেখেছি অনেককিছু আনা হয়েছে? কিন্তু কতটুকু কী হয়েছে জানা নেই। তো হ্যাঁ, শিল্পীদের include করে কমিটি গঠন করে decision নেও। যে artist রা কী চাই? আমাদের রাজ্যে শ্যুটিং স্পটের একটা সমস্যা। বারবার আমাদের একটা যাতগাতে শ্যুট করতে হয়। আমরা যদি ‘গৌরিপক্ষ’ যে গানটা ফানহোলিক থেকে করা হয়েছে সেই স্পটে কতবার শ্যুট হয়েছ, ‘দুগ্গা আইছে’ থেকে শুরু করে ‘জয় মা’ সব গানের শ্যুট এক জায়গাতেই করতে হচ্ছে। একারণে আমাদের যেটা দরকার, আমাদের আমরা film city এর মতো যদি কিছু পাই তাহলে আমরা উপকৃত হই এবং যারাই artist রা কাজ করছে তাদের থেকে মতামত নিয়ে যাতে কাজ করা হয়। Artist রার মতোমত নিয়ে যেন কাজ করা হয়। যার বিয়ে তার মতামত ছাড়া যেমন বিয়ে হয়না তেমনি artist রার মতামত ছাড়া, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি বা এসবকিছু করা অসম্ভব। আর শিল্পীদের জন্য জাতে পেনশানের ব্যবস্থাও করা হয়। মিডিয়া লাইনে যারা আছে তাদের কর্মসংস্থান এবং পেনশনের বিষয়টা যাতে সরকার দেখে।

Related Articles

যোগাযোগ রেখো

82,829ভক্তমত
834অনুগামিবৃন্দঅনুসরণ করা
1,320গ্রাহকদেরসাবস্ক্রাইব

সাম্প্রতিক প্রবন্ধসমূহ