শ্যামলী ত্রিপুরা প্রতিনিধি, কৈলাসহর ১৩ মে।। শ্বশুর বাড়ির লোকজনের শারীরিক এবং মানসিক যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে নিজ শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করলো এক গৃহবধূ। ঘটনা কৈলাসহরের ভাগ্যপুর গ্রামে। আত্মহত্যার ঘটনায় গোটা ভাগ্যপুর গ্রামে তীব্র আতংক বিরাজ করছে। উল্লেখ্য, কৈলাসহরের ধনবিলাশ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে অবস্থিত ভাগ্যপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা বাপ্পু মালাকার ভালোবেসে একই গ্রামের জোনাকি মালাকারকে বিগত দশ বারো বছর পূর্বে বিয়ে করেছিলো। বাপ্পু মালাকার পেশায় গাড়ি চালক। বাপ্পু মালাকারের নিজের একটি মালবাহী গাড়ি রয়েছে। এই মালবাহী গাড়ি চালিয়েই সংসার প্রতিপালন করতেন। বিয়ের পর ভালো ভাবেই সংসার চললেও বিয়ের কয়েক বছর পাড় হয়ে যাবার পরও কোনো সন্তান না হওয়ায় সংসারে অশান্তি শুরু হয়। সন্তান না হওয়াতে প্রায়ই বাপ্পু মালাকার মারধোর করতো জোনাকিকে। সন্তান না হওয়ায় শুধুমাত্র স্বামী বাপ্পু মালাকারই মারধোর করতো না, বাপ্পুর বাড়ির লোকজনও জোনাকিকে শারিরীক ভাবে এবং মানসিক ভাবে নির্যাতন করতো বলে মৃত জোনাকি মালাকারের বোন জানায়। বিগত কয়েক মাস ধরে বাপ্পু মালাকার নিজ বাড়ি ত্যাগ করে নাগাল্যান্ড রাজ্যের ডিমাপুর শহরে গিয়ে অন্যের গাড়ি চালাতো। অথচ নিজের গাড়ি না চালিয়ে ভাগ্যপুর গ্রামের নিজ বাড়িতেই ফেলে রেখেছে। তেরো মে শনিবার দুপুরে হঠাৎ করে জোনাকি মালাকার নিজ শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। জোনাকির শরীরে আগুন দেখে বাপ্পু মালাকারের মা বাবা সহ পরিবারের অন্যান্যরা চিৎকার চেচামেচি শুরু করলে গ্রামবাসীরা ছুটে এসে অগ্নি নির্বাপক দপ্তরের কর্মীদের খবর দেয় এবং বাপ্পু মালাকারের বাড়ির লোকজন জোনাকির বাড়ির মানুষদের ফোনে এই ঘটনা জানায়। অগ্নি নির্বাপক দপ্তরের কর্মীরা ভাগ্যপুর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে জোনাকিকে উদ্ধার করে কৈলাসহরের ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে। জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসার এক ঘন্টা পর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জোনাকিকে মৃত বলে ঘোষণা দেয়। জেলা হাসপাতালে মৃত জোনাকি মালাকারের বোন স্পষ্ট ভাবেই জানায় যে, বাপ্পু মালাকারের বাড়ির লোকজনের শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েই আত্মহত্যা করেছে। জোনাকির মৃত্যুর জন্য বাপ্পু মালাকারের বাড়ির লোকজন দায়ী বলে জানান মৃত জোনাকির বোন। এই ঘটনার খবর পেয়ে কৈলাসহরের মহিলা থানার পুলিশ তদন্তের জন্য ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে যায় এবং জেলা হাসপাতালে মৃতদেহের ময়না তদন্ত করে বিকেল পাঁচটায় ভাগ্যপুর গ্রামে মৃতদেহ নিয়ে যায় মৃতার পরিবার।